ভারতের সংবিধান রচনার বিষয়ে একটি টীকা লেখো।
সূচনা: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ১৫ আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীন দেশরূপে আত্মপ্রকাশ করলেও একটি সংবিধান ছাড়া এই স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে সকল কর্তব্য পালন সম্ভব ছিল না। তাই স্বাধীন ভারতবর্ষে রাষ্ট্র পরিচালনার সঠিক গতিপথ নির্ধারণের জন্য সংবিধান রচনা প্রথম ও প্রধান বিচার্য হয়ে দাঁড়ায়। যেহেতু গণপরিষদ সংবিধান রচনা করেছিল তা-ই গণপরিষদের অপর নাম সংবিধান সভা।
> ভারতে সংবিধান গঠনের প্রেক্ষাপট: ভারতবর্ষে সংবিধান রচনা তথা গঠন ছিল এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ঘটনাবলির ফলশ্রুতি। কারণ-
(ক) নেহরু রিপোর্ট: ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্রের মতে, নেহরু রিপোর্ট ছিল ভারতের সংবিধানের একটি খসড়া। পরবর্তীকালে অর্থাৎ ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের পর জাতীয় কংগ্রেস সংবিধান সভা আহ্বানের দাবি জানাতে শুরু করেছিল।
(খ) কংগ্রেসের দাবি: ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের ফৌজপুর অধিবেশনে ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য একটি নির্বাচিত গণপরিষদ বা সংবিধান সভা গঠনের দাবি জানানো হয়।
এই প্রস্তাবে তিনি মুসলিম লিগ ও রাজন্যবর্গের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান এবং বলেন যে ভারতকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত করাই হলো গণপরিষদের লক্ষ্য।
মূল্যায়ন: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে জুলাই মাসে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আইন গৃহীত হওয়ার পর গণপরিষদ একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌম সংস্থার বৈধতা পায়। প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ বি শিবরাও মনে করেন, শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়টি অগ্রাধিকার পেয়েছিল। কারণ ভারত বিভাজনজনিত সংকটজনক পরিস্থিতি, দেশীয় রাজ্যগুলির অন্তর্ভুক্তির ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তাতে শক্তিশালী কেন্দ্র স্থাপন জরুরি হয়ে উঠেছিল।
0 Comments