• উত্তর ভাষার অন্যতম উপাদান ধ্বনি। এই ধ্বনিও পালটে যায় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে। আবার উচ্চারণগত কারণেও ধ্বনি পালটে যায়। আবার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেও ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। আবার বক্তার বলা ও শ্রোতার শোনার পার্থক্যের মধ্যে ধ্বনি পরিবর্তন ঘটে। ধ্বনি পরিবর্তনের যে বহুবিধ কারণ রয়েছে সেগুলি হল—
• ভৌগোলিক প্রভাব : ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবেশ দেশ ও জাতির ওপর বিশেষ প্রভাব ফেলে। যেখানকার ভূপ্রকৃতি রুক্ষ, সেখানকার ভাষার কর্কশতা ও কঠোরতা বেশি। তেমনি যেখানকার ভূপ্রকৃতি শীতল ও মনোরম, সেখানকার ভাষা মৃদুপ্রবণ হয়। একারণেই জার্মান ও ইংরেজি ভাষা কর্কশ, অন্যদিকে ফরাসি, ইটালি ভাষা অপেক্ষাকৃত কোমল।
•অন্য জাতির প্রভাব : একটি জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে অন্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে থাকলে বা একটি জাতি দীর্ঘদিন কোনো জাতির শাসনাঅধীনে থাকলে ভাষার ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। যেমন, ইংরেজ শাসনের ফলে বহু বিদেশি শব্দ বাংলা শব্দভাণ্ডারে প্রবেশ করেছে। একটি জাতি দীর্ঘদিন অন্য জাতির সংস্পর্শে থাকলে কিছু ধ্বনির গ্রহণ-বর্জন ঘটে। ফলে ভাষা পালটে যায়। •অনুকরণের অক্ষমতা : ভারতবর্ষে বহুকাল গ্রামীণ সভ্যতা বিরাজ করেছে। গ্রামীণ মানুষের অত শিক্ষাদীক্ষা থাকে না। বিদেশি শব্দ বা দুরূহ শব্দ উচ্চারণে একটা অক্ষমতা প্রায়ই লক্ষ করা যায়। ফলে ধ্বনির পরিবর্তন সাধিত হয়। যথা— রিকশা > রিশকা।
• শ্রবণযন্ত্রের ত্রুটি : অনেক সময় শ্রবণযন্ত্রের ত্রুটির জন্য ধ্বনির পরিবর্তন সাধিতহয়। বক্তা ও শ্রোতার শোনার তারতম্য ঘটলে ধ্বনির পরিবর্তন সাধিত হয়। আবার উচ্চারণের অক্ষমতার কারণেও ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। আমরা অনেকেই অনেক শব্দ যথার্থভাবে উচ্চারণ করতে পারি না, ফলে ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে যেমন— গামোছাকে অনেকেই উচ্চারণ করে গামছা।
•লিপিবিভ্রাট : কোনো ভাষার শব্দ অপর কোনো ভাষায় লিখতে সমবর্ণের অভাবে ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে থাকে। যেমন, কলকাতাকে অনেক সময় ইংরেজিতে লেখা। হয় ‘ক্যালকাটা’। আবার পদবি 'বসু' ইংরেজিতে লিখতে গিয়ে হয়ে যায় 'বোস'। আরামপ্রিয়তা : আরামপ্রিয়তার জন্য অনেক সময় ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে থাকে।
আমরা অনেক সময় শৈথিল্য বা আরামপ্রিয়তার জন্য সম্পূর্ণ শব্দ উচ্চারণ না করে শব্দের অর্ধেক অংশ উচ্চারণ করে থাকি, ফলে ধ্বনির বিকৃতি ঘটে। আবার শব্দের উচ্চারণকে অনেক সময় লঘু করার জন্য যুক্তব্যঞ্জন ভেঙে সমব্যঞ্জন করে নেওয়া হয়, ফলে ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে। যেমন – জন্ম > জনম। •উচ্চারণের দ্রুততা : অনেক সময় দ্রুত উচ্চারণের কারণে আমরা বেশ কিছু ধ্বনি উচ্চারণ করি না, ফলে ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে থাকে। যেমন— কোথায় যাবে? এই বাক্যটি দ্রুত উচ্চারণের কারণে হয়ে যায় ‘কোজ্জাবে'।
এ ছাড়াও বিবিধ কারণে ধ্বনির পরিবর্তন সাধিত হয়। যথা— শ্বাসাঘাত, লোকনিরুক্তি, সাদৃশ্য, অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, কবিতার মাত্রাজনিত কারণ ও ভাবপ্রবণতার কারণেও ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে থাকে।
বন্ধুরা আমরা চেষ্টা করছি তোমাদের উত্তরগুলি দেবার জন্য কিন্তু ওয়েবসাইটে কাজ চলছে। তো বন্ধুরা সমস্ত কোশ্চেনগুলি আমরা একবারে দিতে পারছি না তার জন্য আমরা ক্ষমা চাইছি আমরা চেষ্টা করছি প্রশ্নের উত্তরগুলি দেবার
0 Comments