বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।বিজয়নগর সম্পর্কে আলোচনা করো।

 

বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।

অথবা 
বিজয়নগর সম্পর্কে আলোচনা করো।


📍YouTube channel link📍

https://youtube.com/@ksponlineclass?si=lwVmfHP_dBxOLWT_


দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের সবার প্রিয় কিরণ দেবনাথের সাহায্যে ওয়েবসাইটে লেখা হলো বিজয়নগর

 


✒️Answer:-

বিজয়নগর সাম্রাজ্য (১৩৩৬-১৬৪৬ খ্রিস্টাব্দ) দক্ষিণ ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাম্রাজ্য ছিল। এটি প্রধানত বর্তমান কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, এবং তামিলনাড়ু অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল। 



বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলো:



### সামাজিক অবস্থা
1. **বর্ণ ব্যবস্থা:** বিজয়নগর সাম্রাজ্যে হিন্দু ধর্মের বর্ণ ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, ও শূদ্র—এই চারটি প্রধান বর্ণের মধ্যে সমাজ বিভক্ত ছিল। ব্রাহ্মণরা ধর্মীয় কাজ ও শিক্ষা দানে নিযুক্ত ছিলেন, ক্ষত্রিয়রা রাজ্য পরিচালনা ও সামরিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন, বৈশ্যরা ব্যবসায়ী এবং কৃষি কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন, এবং শূদ্ররা মূলত শ্রমিক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।



2. **ধর্ম:** হিন্দু ধর্ম প্রধান ছিল, তবে জৈন, বৌদ্ধ ও ইসলাম ধর্মের প্রভাবও ছিল। মন্দির স্থাপত্য এবং ধর্মীয় কার্যকলাপ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। 




3. **নারীদের অবস্থান:** বিজয়নগর সাম্রাজ্যে নারীদের অবস্থা মোটামুটি ভালো ছিল। শিক্ষিত ও শিল্পকলার প্রতি আগ্রহী নারীদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। তবে, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে নারীদের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ ছিল।




4. **শিক্ষা ও সংস্কৃতি:** বিজয়নগর সাম্রাজ্য শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছিল। তৎকালীন সমাজে সংস্কৃত ভাষা এবং সাহিত্য প্রচলিত ছিল। মন্দিরগুলি ছিল শিক্ষার কেন্দ্র, এবং সেখানে ধর্মীয় ও বিজ্ঞান সংক্রান্ত শিক্ষা দেওয়া হতো।




### অর্থনৈতিক অবস্থা
1. **কৃষি:** বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অর্থনীতির মূলে ছিল কৃষি। সেচ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য অনেকগুলি বাঁধ এবং খাল নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রধান ফসলের মধ্যে চাল, গম, ডাল, এবং অন্যান্য খাদ্যশস্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।




2. **ব্যবসা-বাণিজ্য:** বিজয়নগর সাম্রাজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল। ভারত মহাসাগর অঞ্চলের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল, যা মসলা, তুলা, সোনা, রত্ন, এবং অন্যান্য দ্রব্যাদি রপ্তানি করত। রাজধানী শহর হাম্পি একটি প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল।



3. **শিল্প ও কারুশিল্প:** বিজয়নগর সাম্রাজ্যের শিল্পে ধাতু কাজ, বিশেষ করে ব্রোঞ্জ ও পিতলের কাজ, জুয়েলারি, এবং বস্ত্রশিল্প বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল। মন্দিরের স্থাপত্য ও ভাস্কর্যও শিল্পকলার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল।




4. **মুদ্রা:** বিজয়নগর সাম্রাজ্যে সোনার, রৌপ্যের এবং তামার মুদ্রা প্রচলিত ছিল। মুদ্রায় শাসকদের ছবি এবং দেব-দেবীর ছবি খোদিত থাকতো।


--:মূল্যায়ন:--
এই সমাজ ও অর্থনৈতিক কাঠামো বিজয়নগর সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।বিজয়নগর এর অর্থনৈতিক অবস্থার প্রকৃতি সমৃদ্ধ ছিল কিনা সেই বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। ডোমিং পায়েজ ও নুনিজের মতে--ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ অনেক সময় ইঁদুর, বিড়াল, টিকটিকি খেতো। তাই সমৃদ্ধির অন্তরালে চিরাচরিত দরিদ্রের ঘেষা ঘাত ছিল বিজয়নগরের সমাজে।

Post a Comment

0 Comments