"বাবরের প্রার্থনা" কবিতার উৎস তথা প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোচনা করো।

"বাবরের প্রার্থনা" কবিতার উৎস তথা প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোচনা করো।






"বাবরের প্রার্থনা" কবিতার উৎস তথা প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোচনা করো।
                             অথবা
*বাবরের প্রার্থনা বিষয়বস্তু নিজের ভাষায় আলোচনা করো।
                              অথবা
*বাবরের প্রার্থনা' কবিতার মূলভাব নিজের ভাষায় আলোচনা করো।





📚 বাবরের প্রার্থনা' কবিতার উৎস তথা পটভূমিকা বা পেক্ষাপট : 


কবি শঙ্খ ঘোষে ‘বাবরের প্রার্থনা' কবিতাটির রচনার পিছনে যে উৎস রয়েছে তা হল নিম্নরূপ। যথা- কবি নিজেই তাঁর ‘কবিতার মুহূর্ত' নামক গদ্যগ্রন্থে বলেছেন,
“শেষ হয়ে আসছে ১৯৭৪। বড়ো মেয়েটি বেশ অসুস্থ, তখন ডাক্তারের ভালো ধরতে পারছেন না রোগটা ঠিক কোথায়। শুয়ে আছে অনেকদিন, মুখের লাবণ্য যাচ্ছে মিলিয়ে। অথচ তখন তার ফুটে ওঠবার বয়স। মন্থর হয়ে আছে মনটা। ঘুরে বেড়াচ্ছি একদিন যাদবপুরের ক্যাম্পাসের মধ্যে। দিনের ক্লাস আর সন্ধ্যার ক্লাসের সন্ধিমুখে অনিশ্চিত ফাঁকা বিকেল। বন্ধুরা কেউ সঙ্গে নেই সেদিন। পশ্চিম থেকে পুবে, রাস্তার ওপর পায়চারি করতে করতে ঘরের ছবির সঙ্গে মনে ভিড় করে আসে ক্যাম্পাসেরও পুরোনো অনেক ছবি। দু-একটি ছেলে মেয়ে কখনো কখনো পাশ দিয়ে চলে যায়, তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হয় কদিন আগেও এখানে যত প্রখরতা ঝলসে উঠত নানা সময়ে, তা যেন একটু স্তম্ভিত হয়ে আছে আজ। কেবল যে এখানেই তা তো নয়। গোটা দেশ জুড়ে সে কি খুব শান্তির সময় ছিল; একেবারেই নয়। সংঘর্ষ অশান্তিতেই বরং ভরেছিল দিনগুলি। এই পথ, ওই মাঠ, প্রতিটি বিন্দু তার কোনো না কোনো উন্মাদনার চিহ্ন ধরে আছে ভুলের লাঞ্ছনার, আত্মক্ষয়ের, কিন্তু সেই সঙ্গে কিছু স্বপ্নেরও কিছু জীবনেরও। আজ প্রশমিত হয়ে আছে সব। কিছু একটা হবার কথা ছিল; অলক্ষ্য কোনো প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু হলো না ঠিক, হয়ে উঠল না। কিন্তু কেন হল না? আমরাই কি দায়ী নই? কিছু কি করেছি, আমরা করতে পেরেছি? আমাদের অল্প বয়স থেকে সমস্তটা স্তূপ হয়ে ঘিরে ধরতে থাকে মাথা। ফিরে আসে মেয়ের মুখ। মনে পড়ে আমার নিষ্ক্রিয়তার কথা। তাকিয়ে দেখি কলেজ প্রাঙ্গন ফাঁকা, হাঁটতে হাঁটতে পুবের শেষ প্রান্তে গিয়ে পশ্চিমমুখে ফিরছি আবার, চোখ পড়ে আকাশে। সূর্য আড়াল হয়ে যাবে অল্প পরেই। হঠাৎ একবারে হঠাৎ তখন মনে হলো মাটির উপর জানু পেতে বসে পড়ি একবার এই সূর্যের সামনে কেউ তো নেই কোথাও যেন সমস্ত শরীর ভয়ে উদ্‌গত হয়ে উঠতে চায় অতল থেকে কোনো প্রার্থনা, সকলের জন্য মনে হল নামাজের ছবি। আর সঙ্গে সঙ্গে মনে হল ইতিহাসের পুরোনো সেই গল্প, রুগ্ন হুমায়ুনকে ঘিরে বাবরের প্রার্থনা। মন্থরতার ভিতর থেকে তখন উঠে আসতে চায় কতকগুলি শব্দ : এইতো জানু পেতে এই তো জানু পেতে– এই তো জানু পেতে
পথ ছেড়ে দ্রুত পায়ে উঠে আসি সিঁড়ি বেয়ে তিনতলার ঘরে। দিন আর রাত্রির মাঝখানে অল্প সময়ের জন্য পরিত্যক্ত করিডর, তবে শেষ প্রান্তে আচ্ছন্ন একলা • ঘর, টেবিলের সামনে এসে বসি। মনে হয় একটা লেখা হবে।”
...তারপরই শঙ্খ ঘোষ রচনা করেন 'বাবরের প্রার্থনা' কবিতাটি। এই তো গেল কবির কথা। এবার ইতিহাসের বাবরের কথা। তবে বাবর নিজে
থেকে বলে যান নি, লিখেও যান নি, ঐতিহাসিকদের লেখা থেকে পাওয়া যায়, আর কিংবদন্তি থেকে। বাবরের পুত্র হুমায়ুন কি একটা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তখন যুবক হুমায়ুন।
সম্রাট তথা পিতা বাবরের মনও পীড়িত হল। বাবর নতজানু হয়ে ঈশ্বরের নিকট পুত্রের আরোগ্য প্রার্থনা করলেন। এমনও শোনা যায় এবং জানা যায় যে বাবর পুত্র হুমায়ুনের ব্যাধিকে নিজের দেহে ধারণ করতে চেয়েছেন যাতে পুত্রের যৌবন ফিরে আসে এবং দীর্ঘায়ু হয় সে। এ কামনাও ঈশ্বরের কাছে করেছেন বাবর। অর্থাৎ পিতা নিজে নিশ্চল, পাথর হয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছেন। এ কাহিনি ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে আছে সুতরাং বিখ্যাত ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের লেখাতেও আমরা পেলাম বাবর পীড়িত হুমায়ূনের ব্যাধি নিজের দেহে ধারণ করার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন এবং পুত্রের সুস্থ সবল যৌবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন। অর্থাৎ বাবরের মধ্যে সম্রাটত্বের চেয়ে পিতৃত্বের পরিচয় বেশি করে ধরা পড়ে। সে কারণে দেখা যায় বাবর মাত্র ৪৮ বছর বয়সে মারা যান।



(বন্ধুরা এই ছিল সম্পূর্ণ বাবরের প্রার্থনার কবিতার উৎস তথা পটভূমিকায় বা প্রেক্ষাপট তো বন্ধুরা যদি ভালো লাগে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে সেখানে তোমরা যুক্ত হও ইউটিউব চ্যানেলের নামটি KSP Online Class অনলাইন ক্লাস চাকরি-বাকরির আপডেটের পাশাপাশি তোমরা নিত্যনতুন চাকরির এক্সামের কোশ্চেন সহ তোমরা সাজেশন পেয়ে যাবে তোমাদের নির্দিষ্ট বিষয় অনুসারে বিএ ক্লাসের)






Post a Comment

0 Comments